হুগলি জেলার খানাকুলের রাজা রামমোহন রায়ের জীবনকে নিয়ে একটি গল্প খুব ছোট নয় বরং একটি পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস। এই গল্পের মধ্যে তার জীবনের বিভিন্ন দিক এবং সামাজিক কর্মকাণ্ড উল্লেখ করা হয়েছে। এই লেখা তত্ত্বমূলকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, হুগলির রাজা রামমোহন রায় একজন অপরাজিত মহাসম্রাট ছিলেন, যার মনের ভেতর মানবতার সম্প্রেক্ষিতে বৃহত্তর আদর্শ রয়েছিল। তিনি জীবনের প্রায় সমস্ত সময় মানবতার উন্নতি এবং সামাজিক ভালবাসার প্রচেষ্টা করেছেন।
রাজা রামমোহন রায় একজন ধর্মাত্মা ব্যক্তিত্ব ছিলেন যার হৃদয়ে মানবতার জন্য বিশেষ ভালবাসা ছিল। তিনি মন্দির বানানোর মাধ্যমে ধর্মীয় এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে জোর দিতেন। রাজা রামমোহন রায়ের নেতৃত্বে অসাধারণ উন্নতি এবং উন্নয়নের পথে খানাকুলে অনেক প্রকল্প পরিচালিত হয়। তার প্রধান লক্ষ্য ছিল সামাজিক অপরাধ নিরসন এবং জনগণের ভালবাসা পেতে মানবিক কাজ করা।
রাজা রামমোহন রায়ের প্রতি মানুষের আদর ও সম্মান ছিল অসাধারণ। তিনি ব্যক্তিগত স্বপ্নের প্রতি নজর রাখতেন না, বরং তার প্রধান লক্ষ্য ছিল সমাজের উন্নতি এবং ভালবাসা প্রাপ্তি। রাজা রামমোহন রায়ের সৃজনশীল মসন্দ এবং তার সম্প্রদায়ের কার্যক্রম একে অপরকে অনুসরণ করেছিল। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল সমাজের উন্নতি এবং সকলের সুখ এবং শান্তি।
রাজা রামমোহন রায়ের শিব মন্দির নির্মাণ প্রকল্প একটি অসাধারণ উদাহরণ। তিনি যে এই মন্দির নির্মাণ করেছিলেন, সেই মন্দির এখনও মানুষের মনে ধরা আছে।
সময়টা ঐ ১১৯৬ বঙ্গাব্দ নাগাদ। আমাদের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার অন্তরাধীন খানাকুলের কোটরা এ কানাইলাল বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক জনপ্রিয় জমিদার ছিলেন। জমিদার কানাইলাল বন্দ্যোপাধ্যায় তার ছিল সাতটি স্ত্রী। সাত স্ত্রীর নিত্য দিনের ঝগড়া মেটাতে তিনি নাজেহাল হচ্ছিলেন। কি করবেন! তার সাতটি স্ত্রীকে খুশি করতে জমিদার রত্নাকর নদীর এক খেয়া ঘাটের নাম দিয়ে দিলেন ‘সাত সতীনের ঘাট’। পরবর্তী সময়ে মুছে যাওয়া নদীটির মূল তারকেশ্বর নদীর সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় তা ‘কানা দ্বারকেশ্বর’ নামে পরিচিত হয় এলাকায়। ওই ঘাটের কাছে বর্তমান রয়ে গিয়েছে নালার মতো কানা দ্বারকেশ্বরের এক টুকরো অস্তিত্ব। কিন্তু খানাকুলের ওই ‘সাত সতীনের ঘাট’ এখনো রয়ে গিয়েছে।
ঘাটটির অবস্থান কোটরা এবং রাধানগর গ্রামের সীমানায়। ঘাটের পাশে একটি পুকুরের ধারে পরপর ছটি ভগ্ন প্রায় শিব মন্দির রয়েছে। আরো একটি ছিল জমিদারের বাড়ির পাশের পুকুরের পাড়ে এখন আর নেই। শিব মন্দিরগুলি ও ওই জমিদারেরই বানানো। প্রথম যে মন্দিরটি পুকুরের পাড়ে তিনি নির্মাণ করেন সেটা ছিল তার বড় বউয়ের জন্য। বাকিরা তাকে ছাড়বেন কেন? তারা জমিদারের কাছে তাদের জন্য শিব মন্দির বানিয়ে দেওয়ার বায়না করলেন।
কানায় লাল আর যাবেন কোথায়! তাই তিনি সাত সতীনের ঘাটের পাশে আরো ছয়টি শিব মন্দির করলেন। শুধু স্ত্রীদের বায়না মেটানোর নিদর্শন হিসেবে নয় শিল্পকর্ম হিসেবে মন্দিরগুলি দেখার মতো। মন্দিরগুলিতে রয়েছে দুর্ধর্ষ পোড়া মাটির কাজ। সময়ের সাথে সাথে এবং বয়সের ভারে যেন হল মন্দিরগুলি আভিজাত্যের স্মৃতি বহন করেছে। মন্দিরগুলি সব একই আকারের প্রত্যেকটির মধ্যে একটি করে শিবলিঙ্গ ছিল প্রতিটি মন্দিরের দু’পাশের দেওয়ালে একেবারে সমান্তরালে একটি করে ফুটো ছিল সেই ফুটো দিয়ে এক পাশ থেকে দেখলে সব মন্দিরের শিবলিঙ্গের মাথাগুলি একসঙ্গে প্রায় দেখা যেত। বর্তমানে অবশ্য শিবলিঙগ গুলি চুরি হয়ে গিয়েছে, মন্দির গুলিও নষ্ট হয়ে গিয়েছে প্রায়। অনাদরে অবহেলায় আমাদের বাংলা থেকে এইরকম অনেক প্রাচীন সুন্দর নির্মাণ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
2 Responses
খুব সুন্দর তথ্য পেলাম ❤️🙏
খুব সুন্দর তথ্য পেলাম ।
❤️🙏 খুব ভালো লাগলো।