অভিশপ্ত ভালবাসা পর্ব 6

অভিশপ্ত ভালবাসা পর্ব 6

Written By Taniya Parvin

এক সপ্তাহ পর….
এখন নুরের সারাটা দিনই কান্না করে কেটে যায়। এমনকি কলেজেও নুরকে কান্না করতে দেখা যায়।
দিশা অনেক চেষ্টা করেছে নুরের সাথে কথা বলার কিন্তু লাভ হয়নি ।
নুর প্রতিদিন কলেজে আসে …..অপেক্ষা করে হয়তো পাথরও আসবে …..
পাথর প্রতি দিনই কলেজে আসে নুরকে দেখতে …কিন্তু সে নুরের সামনে আসে না ।
……………………………………………………………………

পাথর নুরের ছবি আঁকছে…..
হঠাৎই পাথরের মনে পরল কিভাবে নুর তার হাত কেটেছিল!
এটা তাকে খুব কষ্ট দিয়েছিল ,কিন্তু তার সে সময় আর কিছুই করার ছিল না।
পাথর নুরের সাথে থাকার মুহূর্ত গুলো …..নুরের প্রতিটা কথা মনে করতে লাগলো।
পাথর : ahhhhhhhh…….. I love you noor!!!!
চিৎকার করে পাথর বলে উঠলো।
ছবিটা সে ছুড়ে ফেলে দিল ।
পাথরের চোখ এবং গাল জুড়ে চলে অস্তিত্ব দেখা গেল।…..
……………………………………………………………………
এদিকে নুর আর সহ্য করতে না পেরে আবার সেই জঙ্গলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।
নুর সেই জঙ্গলে এসে পৌঁছালো ।
নুর :পাথর ……পাথর কোথায় তুমি??আমি জানি তুমি এখানেই আছো, দয়া করে আমার সামনে এসো।।।।।
আসবেনা তো! ঠিক আছে…….
আমি আবার আমার হাতে চুড়ি বাসাবো!!!!
আগেরবার তবে বেঁচে গিয়েছিলাম ,কিন্তু এবার??
আমি 3 পর্যন্ত গুনবো ।।।।।1…..2…..
পাথর :দাঁড়াও!!!!!!!!
নুরের গোনা শেষ হবার আগেই কোথা থেকে পাথর এসে তার সামনে উপস্থিত হলো।
নুর পাথরের দিকে তার লাল হয়ে ফুলে ওঠা চোখ দুটি নিয়ে তাকালো ।
নুর সোজা গিয়ে পাথরকে জড়িয়ে ধরল । কিন্তু বরাবরের মতোই পাথর ধরল না ।
পাথর :তুমি এখানে কেন এসেছ ???(শক্ত গলায় বলল)
(পাথর নুরকে সামনে থেকে জড়িয়ে না ধরলেও, একমাত্র সেই জানে সে কতটা প্রশান্তি পেয়েছে তার ভালোবাসার মানুষটিকে নিজের বাহুর মধ্যে পেয়ে । )
নুর :তুমি কিভাবে আমাকে একা রেখে চলে আসতে পারলে !!!
(নুর পাথরের চোখের দিকে তাকিয়ে কথাটি বলল) পাথর :তুমি এটা খুব ভালো করেই জানো আমরা কখনোই একসাথে থাকতে পারবো না । নুর আমি কোন মানুষ নয় !তুমি আমার কাছে থাকতে পারবে না।
আর যদি তুমি আমার জীবনে চলে আসো…..তুমি আর কখনো ফিরে যেতে পারবে না!!!!!
নুর :কিন্তু আমার জীবনটাই তো তুমি…… তুমি যদি আমার জীবনে না থাকো তাহলে যে আমার কাছে আর কিছুই থাকবে না ।
তুমি ……..তুমি চাইলে আমাকে “mark” করতে পারো !!!!!!
একটা ভ্যাম্পায়ার যদি একটা মানুষের কামড় দেয় তাহলে সে মানুষকে ভ্যাম্পায়ার পরিণত হয় । (ব্যাপার ভ্যাম্পায়ার ডায়েরি থেকে নেওয়া)
যদি তুমি এখুনি আমাকে “mark “না করো তাহলে আমি আজকেই মারা যাব ।।।।
আমি নিজেই নিজেকে মেরে ফেলবো!!!!
এবার সিদ্ধান্ত তোমার ওপর……তুমি কি করবে??????

পাথর: নুর……
নুর :না কোন নুর নয়…….তুমি ভালো করে ভেবে বলো তুমি কি চাও ……….
কিছুক্ষণ কেটে যাওয়ার পর………..

নুর :ঠিক আছে …….আমি তোমার উত্তর পেয়ে গিয়েছি!!!!!
নুর নিজের হাত দিয়ে তার চোখের জল গুলি মুছে নিল। নুর পাথরের চোখের দিকে তাকিয়ে পকেট থেকে সেই ছুড়িটা বার করে নিজের হাতের উপর চালিয়ে দিল ।
নুরের হাতটা রক্তে লাল হতে শুরু করে দিল ।
পাথর নুরের রক্ত দেখে ঘামতে শুরু করলো । নুরের চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে উঠতে শুরু করলো।
নুর পড়ে যেতে নিলেই পাথর তাকে ধরে নিল ।
পাথর জানে না যে তার চোখ দুটো লাল বর্ণ ধারণ করেছে ।
পাথরের হাতগুলো অস্বাভাবিকভাবে কাঁপতে শুরু করেছে ।
পাথর বুঝতে পারছে না সে কি করবে । পাথরের “fangs”(ভ্যাম্পায়ারে দাঁত দুটিকে fangs বলে ) বাইরে চলে এসেছে । পাথর আর কিছু ভাবতে না পেরে নূরের গলায় কামড় বসিয়ে দিল।
নিজের সাথি হিসাবে তাকে মার্ক করে দিল ।
কিছু সময় পর সে সরে এলো ।
পাথর নিজের কোলের ওপর থাকা নুরকে আলতো করে চাপড় দিয়ে তুললো।
নুর যখন চোখ খুলল ……দেখা গেল তার চোখ দুটো পাথরের মতোই লাল !
পাথর নুরের হাতের যেখান থেকে কেটে গিয়েছে সেখানে ঠোঁট ছোঁয়ালো ।
কিছুক্ষণের মধ্যেই নুরের হাতটা আবার আগের মত হয়ে গেল। সেখানে আর কোন কাটার দাগ দেখা গেল না।
দুজনের চোখেই জল ……….
পাথর নুরের কপালে সাথে নিজের কপালটা থাকিয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিল।
পাথর: তুমি এটা কেন করলেন নুর !(কান্না করতে করতে বলল)
এখন তুমি আর তোমার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবে না ।
তুমিও আমার মত পশুতে পরিণত হয়ে গিয়েছো।
নুর: আমার দিকে তাকাও ……..তুমি ভাবতেও পারবেনা আমি কতটা খুশি !!!!
আমি যেটা চেয়েছি সেটাই পেয়েছি…….
“তোমাকে “


বলেই পাথরকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।
নুর :I love you….
পাথর:I love you too ……..
দুজনেই নিজের চোখে জল গুলি মুছে নিলো।
পাথর : আচ্ছা এখন যাওয়া যাক????
নুর :কোথায় ????
পাথর :আমাদের বাড়ি !!!!(একটা দুষ্টু হাসি দিয়ে বলল)
কথাটি বলেই নুরকে কোলে তুলে বাড়ি দিকে রওনা দিল।

……………………………………………………………………

গভীর জঙ্গলের কোথাও একটা থেকে খুব জোরে কথা বলার আওয়াজ শোনা গেল
“এই অভিশপ্ত ভালবাসাই তোমাকে স্বাগতো নুর”

2 Responses

Leave a Reply to Bappa Dhara Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share:

RECENT POSTS