সময়, ইংরেজিতে বলে ” time “
সময় আসলে অবস্থার পরিবর্তন। এমনটা ভাববার একটা যৌক্তিক কারণ আছে। আমরা এখন পৃথিবীতে আছি। আমাদের চারপাশে সকল বস্তুই চলমান বা স্থির। কোন একটি বদ্ধ ঘরে আমরা সকল বস্তুকে স্থির করে রেখে দিয়ে যদি একজন মানুষকে ঘরে ছেড়ে দিই তাহলে সেও প্রাথমিক অবস্থায় নির্ধারণ করতে পারবে না সময়ের পরিবর্তন হচ্ছে কি না। কিন্তু এটা আমরা সবাই জানি যে, পৃথিবী ঘুরছে। তাই অবস্থার পরিবর্তনও হচ্ছে। কোনভাবে আমরা যদি একটা পরম স্থিতিশীল বস্তুকে খুজে পেতাম তাহলে তার সাপেক্ষে আমরা কোন বস্তুকে পরম স্থিতিশীল চিন্তা করতে পারতাম এবং আমরা তার অবস্থার পরিবর্তন করে পুনরায় সেই অবস্থানে ফিরিয়ে আনলে সেটা টাইম ট্রাভেলিং হতো। কিন্তু মহাবিশ্বে কোন কিছুই পরম স্থিতিশীল নয়। আর সময় প্রসংগ কাঠামোর উপর নির্ভর করে। আইন্সটাইনের থিওরি ওব রিলেটিভিটি তে বলা আছে যে সময় আপেক্ষিক। এটা প্রকৃতপক্ষে অবিজার্ভারের অনুভবের উপরে নির্ভরশীল।
একটি ব্ল্যাকহোলের প্রান্তসীমার বাইরের স্পেসে সংকুচিত আয়তন, সময়ের প্রবাহকেও পুনর্বিন্যাস করে।
মহাবিশ্বে স্পেসে আমাদের অবস্থানগত বিভিন্ন স্বাধীনতা আছে। ইচ্ছেমতো বিচরণ আমরা করতে পারি, তবে সময়ের একটি একমুখী স্রোতে চলতে আমরা বাধ্য।
গাণিতিক হিসাবে দেখা গেছে, ব্ল্যাক হোলের প্রান্তসীমা অতিক্রম করলে ভেতরে ঢোকা গেলে সেখানে সময় হবে অনড়। ফলে সময়ের সঙ্গে ছুটে চলার বাধ্যবাধকতা থাকবে না, তবে সেই সঙ্গে বাজে বিষয়টি হলো, আমরা তখন স্পেসে বিচরণের স্বাধীনতাও হারাব। এটা অনেকটা টাইম ট্র্যাভেলের মতো।
এই দৃশ্যপট আমাদের সময়ের প্রকৃতি সম্বন্ধে ভালো ধারণা দিলেও, আলোর গতি ও ব্ল্যাক হোলে ভ্রমণে সীমাবদ্ধতা, সময়কে বিপরীতমুখী করার বাস্তবসম্মত উপায় বের করা থেকে আমাদের বিরত করছে।
একই গতিতে এগোতে থাকা দুজন ব্যক্তি এটা মেনে নেবেন যে, তাদের পার হওয়া দূরত্ব ও সময়ের পরিমাপ সমান। তবে একজন যদি গতি পরিবর্তন করেন তাহলে তিনি অপরজনের সময় ও দূরত্ব পরিবর্তিত হতে দেখবেন।
ফলে এক্ষেত্রে একজনের সঙ্গে অন্যজনের অবস্থান বিবেচনায় নিলে দেখা যাবে সময় মোটেও স্থির সার্বজনীন কোনো একক নয়। এটি একটি আপেক্ষিক পরিমাপ যা বস্তুর দ্রুত বা ধীর গতিতে চালিত হওয়া বা তাদের অভিকর্ষণ বল কম-বেশি হওয়ার উপর নির্ভরশীল।
অভিকর্ষ বল স্পেস ও টাইমকে বাঁকিয়ে দিতে পারে; অভিকর্ষ বল যত শক্তিশালী হবে ততোই এটি স্পেস-টাইমকে বাঁকা করতে পারবে, এবং সময় ততো ধীরে চলতে থাকবে।
এই কারণেই পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ থেকে দূরে ঘুরপাক খাওয়া ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে নভোচারীরা পৃথিবীর তুলনায় কিছুটা ধীরে বুড়ো হন।
গতি বা মহাকর্ষীয় টানে সময়ের গতি ধীর হওয়ার বিষয়টি সাদা চোখে পরিমাপ করা বেশ কঠিন। তবে আলোর বেগে কেউ ছুটতে পারলে তার কাছে সময়ের গতি অনেক কমে আসার বিষয়টি প্রকটভাবে ধরা দেবে।
তাত্ত্বিতভাবে, আলোর গতিতে এগোতে থাকা কোনো বস্তুর ক্ষেত্রে দেখা যাবে সেখানে ‘ঘড়ি’ ধীর গতিতে চলছে। আলোর বেগের চেয়ে দ্রুত গতিতে এগোতে থাকলে, তাত্ত্বিকভাবে সেই ঘড়িটি চলবে আমাদের অবস্থান থেকে উলটো দিকে, আর ওই বস্তুটির অবস্থান থেকে আমাদের ঘড়ি উল্টোভাবে চলবে।
আমাদের জীবনে সময়টা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা মানুষ বোঝে না। সময় এমন একটা জিনিস যেটা চলে গেলে আর ফিরে পাওয়া যায় না, তুমি যতই চেষ্টা করো তাকে আর ফেরাতে পারবে না। যেমন কথাতেই আছে,” দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝেনা” ঠিক তেমনই, সময়কে যদি কেউ ঠিকঠাক ব্যবহার না করতে পারে তাহলে, সে জীবনে কোনদিনই সফল হতে পারবে না।
আবার কেউ কেউ বলে, সময় থাকতে থাকতে সময়ের সদ্ব্যবহার কর সময়কে যদি ঠিকঠাক করে আমরা ভালো ব্যবহার করি তবেই সময় আমাদের ভালো কিছু রিটার্ন দেবে, আর যদি সময়ের কোনোভাবে খারাপ ব্যবহার করি তাহলে সময় আমাদেরকে ঠিক খারাপটাই রিটার্ন দেবে।
আমরা যখন ছোট ছোট ছিলাম তখন আমরা কিছুই বুঝতাম না কোনটা ঠিক কোনটা ভুল কখন কি করলে কি হবে কি না হবে সে সব কিছুই জানতাম না। সময়ে পড়তে না বসলে ,সময়ে খেতে না বসলে, খেলাধুলা না করলে কি হবে সে সবকিছুই বুঝতাম না।কিন্তু যখন বড়ো হয়ে বুঝতে শিখলাম তখন মনে হল যে, এটা করলে ভাল হত- ওটা করলে ভালো হতো ,এটা এভাবে হত – ওটা ওভাবে হতো,কিন্তু তখন অনেক ছোট ছিলাম যে কারণে সেই সময়টা পেরিয়ে গেছে। তাই আর এগুলো ভেবেও আর কিছু করতে পারবো না,এটাই হচ্ছে সময়। ছোটবেলায় আমরা অনেক কিছু ভুল করি অনেক দুষ্টুমি ও করি কিন্তু বড় হয়ে যখন ভাবি যে ওগুলো ভুল ছিল, কিন্তু এই ভুল ছিল গুলো এখন ভেবে আর লাভ নেই কারণ আমাদের সেই ফেলে আসা সময় পেরিয়ে এসেছি আমরা এখনকার সময়ে দাঁড়িয়ে আছি।
ছোটবেলায় আমরা অনেক খারাপ কথা বলে আসি। হয়তো এমন এমন ভুল করে বসি যেগুলো আমাদের সেই ছোট মাথায় ঢোকার মতন ছিল না। কারণ তখন আমরা ছোট,আমরা কিছু বুঝি না কোনটা ঠিক কোনটা ভুল কিন্তু কথাতেই আছে সময় বুঝিয়ে দেয় কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল। তাই আমরা বড় হয়ে ঠিক ভুলের বিচার করতে পারছি। আজ আমরা realised করতে পারছি। যে এগুলো ভুল ছিল, ওগুলো করা আমাদের উচিত ছিল না, খারাপ খারাপ কথা বলা উচিত না। এই খারাপ কথা মানুষকে কষ্ট দেয় হয়তো নিজেও এক খারাপ মানুষ হয়ে উঠতে পারতাম, কিন্তু সময় আমাদের ঠিক পথে নিয়ে যায় কারণ ছোটরা ভগবান বা আল্লাহর এক আরেক রূপ তাই আমরা ছোটবেলায় যতই ভুল করি না কেন সময় আমাদের ঠিক রাস্তায় নিয়ে যাই। কারণ সেও জানে ছোট্ট শিশুরা নিষ্পাপ ফুলের মতন। তারা তাদের অজান্তেই ভুল করে বসে কিন্তু আমরা বড় হয়ে ভাবি যে সত্যি আমাদের খুব ভুল হয়েছিল। আজ যদি আমরা তখনই বড় হয়ে যেতাম তাহলে হয়তো এইসব ভুলগুলো করে বসতাম না।
ছোটবেলায় আমরা পড়াশোনাকে বেশি গুরুত্ব দিতাম না, শুধু খেলে – খেলেই বেড়াতাম আজ যখন বড় হয়েছি বুঝতে শিখেছি কিন্তু এখন মনে হয়, ইস আজ যদি আমরা ছোট থেকে ভালোভাবে পড়তাম হয়তো আজ আমরা ডাক্তার হতাম, কি মাস্টার হতাম বা ইঞ্জিনিয়ার হতাম, আরো অনেক কিছু হতে পারতাম। আজ হতে পারিনি কারণ, আমরা পড়াশোনা ঠিক সময়ে করতে পারিনি। সময়কে ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারিনি, তাই আজ কিছু হয়ে উঠতে পারিনি। কিন্তু হ্যাঁ, আমাদের পরের জেনারেশন কে নিশ্চয়ই সময়ের সম্পর্কে ঠিকঠাক বোঝাতে পারবো কারণ নিজে যেই সময়টা অপচয় করে এসেছি সেই সময়টা আর পরের জেনারেশনদের অপচয় করতে দেব না। সময়ের যে কতটা গুরুত্ব আজ বুঝতে পারছি কারণ আমরা সময়কে অনেক নষ্ট করে দিয়ে এসেছি। ঠিক সময়ে আমরা ঠিকঠাক কাজ করতে পারিনি। তাই আজ সময় আমাদের সাথ দেয়নি, কিন্তু নিশ্চয়ই সাথ দেবে আমাদের পরের জেনারেশনদের। কারণ এখন আমরা সময়ের গুরুত্বটা বুঝতে শিখেছি তাই আর চাইবো না যে এই ভুলটা দ্বিতীয় বার রিপিট হোক।
এটাই “সময়”, যে সময় একবার চলে যায় সে আর ফিরে আসে না তা তুমি যতই আফসোস করো বা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করো সে কোনদিনই ফিরে আসবে না তাই আমরা চেষ্টা করব সময়কে ঠিকঠাক ব্যবহার করতে। সময়ের সাথে সাথে তাল মিলিয়ে চলতে।
6 Responses
WOW supereb
Thanks 😊
Sikhonio Post
Haa
Bah Ghotona gulo koto this ta niyea bitirko thakte ee pare karon kono clear concept to aakon oo ase ni
Hmm