শুদ্ধের ধারা | সাধারণ বাড়ির মেয়েটার কথা | Part-7

শুদ্ধের ধারা | সাধারণ বাড়ির মেয়েটার কথা | Part-7

Written By Taniya Parvin

পর্ব 7
বাইরে বৃষ্টির আমেজ মিসেস খোদেজা আর নূর মিলে খিচুড়ি রান্নার ব্যবস্থা করছে ।খিচুড়ি ,বেগুন ভাজা, ইলিশ মাছ ভাজা, আহা !বৃষ্টির দিনে যেন জমে যায়। ধারাও পাশে থেকে তাদের হাতে হাতে সাহায্য করে দিচ্ছে। সব কেটে রেডি করার পর যখন মিসেস খোদেজা চুলা ধরাতে যাবেন তখন শুদ্ধ এসে বলল “আজকের খিচুড়িটা আমি রান্না করছি। “
ধারা শুদ্ধের কথা শুনে অবাক হল একটু নয় অনেকটাই। কারণ গ্রাম এলাকায় চট করে ছেলেদের বাড়ির কাজ করতে দেখা যায় না যে সমস্ত ছেলেরা বাড়ির কাজ করে তাদেরকে নিয়ে পাড়াতে হাসাহাসি হয় ছেলেদের নাকি বাইরের কাজে মানায় ঘরে কাজ সেইটা তো মেয়েদের করার কথা ছেলেরা কেন করবে?
ধারা অবাক হয়ে শুদ্ধ কে জিজ্ঞাসা করল “আপনি রান্না করেন পারেন ?”
শুদ্ধ ধারার কথাই বলল “এখানে না পারার কি আছে? “
ধারা তখন বলল “কিন্তু আপনি ছেলে হয়ে রান্না কি করে? “
শুদ্ধ ধারার মনোভাব বুঝতে পারল তখন সে হেসে বলল “আচ্ছা ধারা আমরা যে হোটেলে খায় বড় বড় রেস্তোরাঁতে সেখানে তো এরকম ছেলেরাই রান্না করে তাই না ,তাহলে বাড়িতে ছেলেদের রান্না করতে অসুবিধা কোথায় নাকি এটা তাদের পুরুষত্ব লাগবে ।
ধারা :-না সেটা না কিন্তু এর আগে কখনো আমি ছেলেদের এভাবে বাড়ির কাজ করতে দেখিনি তাই জিজ্ঞাসা করলাম ।
শুদ্ধ:- আমি রান্না শিখেছিলাম মাকে সাহায্য করার জন্য। বাবা যাবার পর মাকে দেখেছি আমাদের দর্জির কাজ করতে। মা সারাদিন কাজ করে এসে রান্না চাপাতো বাইরের কাজ করে এসে বাড়ির রান্না করাটা ভীষণ কষ্টের ছিল মায়ের জন্য সেটা আমি দেখে বুঝতে পারতাম মাকে সাহায্য করার জন্যই এই রান্নাটা শেখা আমার। অন্তত মা যখন কাজ করে এসে এক মুঠো ভাত খেতে পারবে। সেটা দেখে একজন ছেলের যে কতটা আনন্দ হয় সেটা তুমি বুঝবে না ধারা। “
ধারা শুদ্ধের কথাগুলো খুব মনোযোগ সহকারে শুনল। আসলেই তো একজন ছেলে কি পারে না তার মাকে কাজে সাহায্য করতে । একজন মা গোটা সংসার এবং বাইরের সব কাজ করে আসতে পারলে একটা ছেলে কি তার মায়ের সামনে এক মুঠো ভাত রান্না করে ধরতে পারবেনা। পারবে তো অবশ্যই পারবে। শুদ্ধের মতো ছেলেরা হলে অবশ্যই পারবে। ধারা বরাবরের মতোই শুদ্ধের মনোভাবনাতে মুগ্ধ হল।
শুদ্ধের রান্না শেষে সবাই একসাথে খেতে বসল। ধারা সবাই কে খাবার বেড়ে নিজের জন্য ও নিল। ধারা খাবার মুখে নিয়ে বুঝল আহা কি অসাধারণ স্বাদ। এত ভালো রান্না তো ধারা নিজেও করতে পারেনা।
সেই দিনের মতো খাবার শেষ করে সবাই ঘুমাতে চলে গেল।

……….

Last Part

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share: