শুদ্ধের ধারা | সাধারণ বাড়ির মেয়েটার কথা | Part-4

শুদ্ধের ধারা | সাধারণ বাড়ির মেয়েটার কথা | Part-4

Written By Taniya Parvin

ধারা ছবিটা দেখার পর থেকেই ভাবনায় বিরাজ করতে শুরু করল” শুদ্ধ ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট তাহলে কেন সে আমাকে বলল যে সে চাষ করে !”
তখনই পাশ থেকে শুদ্ধের বোন নূর যাচ্ছিল ।
ধারা তাকে ডেকে বলল “আচ্ছা নুর ওই ছবিটাতে তোমার দাদাভাই কেন ?
তখন নুর বলল” কেন ভাবি আপনি জানেন না ?”
ধারা বলল “কি জানব ?”
নুর বলল “দা ভাই তো রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি থেকে এগ্রিকালচার নিয়ে পড়েছে । জানেন ভাবি দা ভাই ইউনিভার্সিটির খুব ভালো ছাত্রের মধ্যে একজন, ডিপার্টমেন্টের সব স্যারেরা দাভাই এর ভীষণ প্রশংসা করত । “
নূরের কথাগুলি শুনে ধারার যেন বিশ্বাস চাইলো না।
শুদ্ধ যদি এগ্রিকালচার ডিপার্টমেন্টের এত ভালো স্টুডেন্টই হয়ে থাকে তাহলে সে কোন চাকরি না করে চাষ কেন করছে ?চাষ করে তার লাভ টাই বা হবে কি করে হবে? সে চাইলে তো কোন ভালো কোম্পানিতে চাকরি করতে পারতো, তাহলে ?করছে না কেন ?
ধারার মনে এইসব ভাবনা গুলো ঘুরপাক খেতে থাকে। ধারা নূরের কথায় ভাবনার জগত থেকে বেরিয়ে আসে। “ভাবি আপনি অনেকক্ষণ ধরে এখানে বসে আছেন ঘরের ভিতরে কি একটু রেস্ট করুন । “
ধারা নূরের কথা শুনে ঘরের ভেতরে চলে গেল বিশ্রাম নেয়ার জন্য কিন্তু তার মনে প্রশ্নগুলি থেকেই গেল। সে ভাবলো শুদ্ধ কে জিজ্ঞাসা করা দরকার ,কেন সেটা এত সুন্দর একটা ক্যারিয়ার ছেড়ে চাষ করছে ?
তার এভাবেই সারাটা দিন মিসেস খোদেজা এবং নূরের সঙ্গে কেটে গেল ।
সন্ধ্যা বেলায় শুদ্ধ বাড়ি আসলো মিসেস খোদেজা সন্ধ্যায় মুড়ি মাখা এবং চা বানিয়েছেন সবার জন্য । সবাই একসঙ্গে সন্ধ্যা নাস্তা করতে বসল । নুর এবং শুদ্ধের ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ঝগড়া লেগেই থাকলো। নুরের কথা শুদ্ধকে নাকি বেশি মুড়ি মাখা দেওয়া হয়েছে এবং তাকে নাকি কম , শুদ্ধের টা খেতে নাকি বেশি সুন্দর তারটা ভালো না, শুদ্ধ ও বোনকে খ্যাপাতে ছাড়লো না। ধারা হাসিমুখে তো ভাই বোনের এই মিষ্টি ঝগড়া গুলো দেখছিল । মিসেস খোদেজা দু’ভাইবোন কি বকতে শুরু করলেন” তোমরা দুজন এখনো কি বাচ্চা আছো বাচ্চাদের মতো ঝগড়া করছো ।”
শুদ্ধ মায়ের কথায় একগাল হেসে বলল “তোমার কাছে সবসময়ই তো আমরা বাচ্চাই থাকবো তাই না মা ?”
ধারার কেন যেন ভীষণ সুখ সুখ পেল ,এটাই তো আসল পরিবার যারা একসঙ্গে মিলেমিশে যেকোনো সময় একে অপরের সাথে থাকতে পারে । হ্যাঁ শুদ্ধোধের আর্থিক অবস্থা হয়তো অতটা ভালো না ,কিন্তু তাদের পরিবারের সুখ রয়েছে যেটা ধারা সে ছোটবেলা থেকে কখনোই পাইনি। সে হাসিমুখে মা ছেলে মেয়ের কথোপকথন শুনতে লাগল।
নাস্তা করার পর যে যার ঘরে গেল।
নুর চলে গেল পড়তে মিসেস খোদেজা পাশে কাঁথা সেলাই করতে বসলেন ।
শুদ্ধ এবং ধারা ওঠে তাদের ঘরে গেল। শুদ্ধের ঘরে লাগয়া একটি বারান্দা রয়েছে , সামনে টিনের ছাউনি বানানো সেখান থেকে নিচে তাকালে দেখা যায় শুদ্ধের গোপন করা আম গাছের বাগান ।
শুদ্ধ সেখানে একটি কাঠের চৌকির ওপর বসে বাইরে দৃশ্যটি দেখতে লাগলো। ধারাও গিয়ে তার পাশে অন্য একটি চৌকিতে বসলো ।
ধারার তখন সকালে সেই ছবিটির কথা মনে পড়ল।
সে শুদ্ধ কে জিজ্ঞাসা করল” আচ্ছা আপনি তো রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি থেকে এগ্রিকালচার নিয়ে পড়েছেন তাহলে আপনি কোন চাকরি না করে সামান্য এই চাষবাসের কাজে কেন নিজেকে নিয়োগ করেছেন ?আপনি চাইলেই আপনার একটি উজ্জ্বল ক্যারিয়ার থাকতে পারতো । তাহলে, সব ছেড়েছুড়ে এই গ্রামের জমি আঁকড়ে ধরে কেন রয়েছেন?
ধারা কথা গুলি কৌতূহলের বসেই জিজ্ঞাসা করে ফেলল।
উত্তরে শুদ্ধ বলল…………..

Part -5

One Response

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share: