কবুল বলার পর ও যেন বিশ্বাস হচ্ছে না ধারার যে তার মামি শুধুমাত্র তাকে পচ্ছন্দ করতো না এবং ধারা তাদের বাড়িতে থাকে বলে একটা গ্রামের বয়স্ক চাষার সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হয়ে গেছে।
বুঝতে পারছেন না তো কিছুই, আসুন সবার আগে আমরা আমাদের গল্পের নায়িকার পরিচয় জেনে নেই। ধারার পুরো নাম হচ্ছে ধারা এহসান, এই বছর অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। অনান্য গল্পের মতো কিন্তু আমাদের ধারা দেখতে কোনো পরির মতো নয়, আর না আছে তার দুধে আলতা গায়ের রং। কিন্তু ধারার চোখ দুটি যেন মায়ায় ভরা, টোল পরা হাসি কবিদের ভাষায় যাকে বলে মায়াবিনী।
ধারা আমির এহসান এবং মহিমা এহসান এর একমাত্র মেয়ে। খুব সুখী পরিবার ছিল তাদের। আমির এহসান ছিলেন একজন বড়ো শিল্পপতি । একদিন যখন মহিমা এহসান এবং আমির এহসান এক জায়গায় যাওয়ার জন্য গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলেন তখন মাঝ রাস্তায় তাদের গাড়িটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে যায় এবং তারা দুজনে সেখানেই মারা যায়। ধারার বয়স তখন ছ বছর। একটা ৬ বছরের শিশু তার বাবা-মাকে হারায় তারপর তার নানা ভাই তাকে নিজের সাথে নিয়ে আসেন । এখানে বড় হতে থাকে সে কিন্তু এই জিনিসটি পছন্দ হয় না তার মামির । তিনি ধারাকে শুধুমাত্র একটি বোঝা ছাড়া কিছুই মনে করতেন না। অথচ ধারা আমির আহসানের সম্পত্তির একমাত্র মালকিন। ধারার বাবার রেখে যাওয়া সব সম্পত্তি তার মামী এবং মামা ভোগ করেন। অথচ তারপরও তাদের মনে হয় ধারা তাদের বেশি খরচের কারণ সে নাকি শুধুই তাদের উপর বোঝা বাড়াই এবং তাদের টাকা-পয়সা এবং অন্য ধ্বংস করে। তাই ধারার মামি এবার ঠিক করেছেন তার বিয়ে দিয়ে দেবেন ।যে কোন একটা সম্বন্ধ এলেই রাজি হয়ে যাবেন।
এভাবেই তার বিয়ে ঠিক হয় এক বয়স্ক চাষার সাথে। হা বয়স্ক চাষা তাকে সাজানোর সময় এটাই তো বলছিল পাশের বাড়ির কাকিরা।
বিয়ে পরানোর সময় ধারা বুঝতে পারলো যে তার পাশে সেরোয়ানি পড়া একটা পুরুষ অবয়ব বসলো। হয়ত এটাই ধারার স্বামী কিন্তু তাকে দেখার বিন্দু মাত্র চেষ্টা সে করেনি। বরং সে তখন নিজের জীবনের হিসাব মেলাতে ব্যস্ত ছিল, সে কি সত্যিই সবার ওপর বোঝা হয়ে গিয়েছিল, সে তো বাড়ি সারা কাজ করে নিজে টিউশান করিয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতো তাহলে।যখন যে যেমনটা বলেছে সে ঠিক সেটাই করেছে,কখনোও কারও কথার বাইরে সে যাইনি,সে বরাবরই ভীতু টাইপের।এই সব ভেবেই ধারা একটি দীর্ঘশ্বাস ছারে। কাজী সাহেব কবুল বলতে বল্লে কোন দিকে না তাকিয়ে সে কবুল বলে দায়।
বর্তমানে সে এখন ফুল দিয়ে সাজানো একটি ঘরে বসে আছে। ধারার শ্বশুর বাড়িটি টিনের ছাউনি বিশিষ্ট মাটির বাড়ি। ধারা নিজের ঘরটা ভালো করে দেখছিল হঠাৎ সে একটি টেবিলের উপর ল্যাপটপ দেখে ভীষণ অবাক হয়।
ধারা মনে মনে ভাবে, “আজকাল চাষিরাও আধুনিক হয়ে গিয়েছে, যে ল্যাপটপ ব্যবহার করে?? কিন্তু তার ল্যাপটপ দিয়ে কী কাজ? “
এসব ভাবার সময় পেছন থেকে একটি পুরুষালী কন্ঠস্বর ভেসে আসে। ধারার ভয় হতে মানুষটা কেমন হবে, কি বলবে এটা ভেবে।
পুরুষালী কন্ঠ টা বলে ওঠে
Next in Part 2