“উফ কত দেরি হয়ে গেল! দেখলি তো আমি বলেছিলাম বাসে করে যাই কিন্তু না তোর তো আবার রোমাঞ্চকর ড্রাইভে তেই যেতে হবে। “
রুহি : “আরে বাবা এত টেনশন করছিস কেন বলতো আমরা ঠিক পৌঁছে যাবো। “
“হ্যাঁ সেটাই তো। দেখতে পারছিস না নাকি রাত 1 টা বাজছে আর আমরা এখনও জঙ্গলটাই পার করতে পারলাম না। রাস্তাটাও ঠিক ভাবে দেখতে পারছি না। জানিনা হাই রোড এ কখন উঠবো। “
রুহি : “পৌছে যাব ঠিক তুই চিল কর। “
আমি রুহির দিকে একটা বিরক্তিকর লুক দিয়ে ড্রাইভ করাই মনযোগ দিলাম।
আমি তানিয়া। অনার্স লাস্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট। আমার সাথে আছে আমার বান্ধবী রুহি।
আমরা আজ যাচ্ছি পুনে আমাদের বাসে করে যাবার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে এসে রুহি জেদ করে যে সে গাড়ি নিয়ে যাবে। আরকি করার গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পরলাম। কিন্তু সমস্যা হল যে রুহির কথাতে আমি জঙ্গলের ভেতরের রাস্তা দিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এখন মনে হচ্ছে রোমাঞ্চকর যাত্রার চক্করে আমি ভুল করেছি।
এতো রাত হয়ে যাবার জন্য রাস্তায় আমাদের গাড়ির আলো ছাড়া আর কোন আলো নাই। কোন লোকজনকে ও দেখা যাচ্ছে না। চারিদিকটাই কি অদ্ভুত রকমের নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। থেকে থেকে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে। এখন তারাতারি লোকালয়ে যেতে পারলে বাঁচি।
হঠাৎ সামনে দেখলাম দুটি রাস্তা দুই দিকে যাচ্ছে। আমি এবার টেনশনে পরে গেলাম কোন রাস্তা দিয়ে যাব।
“এই রুহি গুগল ম্যাপে দেখ না কোন রাস্তা দিয়ে যাব! “
রুহি: ম্যাপে বামদিকের রাস্তাটি দেখাচ্ছে।
আমি রুহির কথা মতো গাড়িটি বামদিকে ঘোরালাম।
কিছু দূর যাবার পর দেখলাম সামনে রাস্তা নাই।
“একি রুহি তুই যে বল্লি এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া যাবে কিন্তু সামনে তো রাস্তা বন্ধ। “
রুহি: ম্যাপে তো এই রাস্তাটাই দেখাচ্ছিল।
“আর একবার দেখ। “
রুহি: একি ম্যাপে কিছুই দেখাচ্ছে না।
“কি সব বলছিস? কিছু দেখাবে না কেন? “
রুহি: তুই নিজেই দেখ!
আমি রুহি হাত থেকে ফোন নিয়ে দেখলাম ও সত্যি কথাই বলছে।
আমি এবার চিন্তায় পরে গেলাম কি করব?
“রুহি এখন কি করব যা অন্ধকার গাড়ি তো ব্যাক ও করতে পারবোনা”
রুহি: জানিনারে। সব আমার দোষ আমিই বলেছিলাম এই রাস্তা দিয়ে আসতে।
কথাটি বলেই রুহি কেঁদে ফেলে।
“আরে তুই কাঁদছিল কেন? এখানে তোর একার দোষ কথাই আমিও তো তোর কথাই সায় দিয়ে এসেছি। “
হঠাৎ করে পেছন থেকে একটি গাড়ির আওয়াজ আসে। আমি আর রুহি খুব ভয় পেয়ে যাই কারন গত 2ঘন্টার ওপর আমরা এই জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি কিন্তু কোন গাড়ি দেখতে পায়নি।
পেছনের গাড়িটি থেকে আওয়াজ আসে “আপনারা এখানে দাড়িয়ে আছেন কেন? “
আমি অনেক টা সাহস নিয়ে তার সাথে কথা বলে উঠি।
কারণ এখন সেই ছিল আমাদের সাহায্য করার জন্য।
“আমরা পুনে যাবার জন্য বেড়িয়ে ছিলাম। ম্যাপে এই রাস্তাটি দেখে রাস্তা টিতে এসে দেখি সামনে রাস্তা নাই। এখন অন্ধকারে গাড়ি ঘোরাতেও পারছি না। “
সে তখন বলে উঠে “আমিও ছত্তিসগড় যাবার জন্য বেড়িয়ে ছিলাম আর এখানে এসে ফেসে গিয়েছি। “
আমার তার কথা শোনার পর খটকা লাগে। কারন ছত্তিসগড় যাবার রাস্তা এটা নয়।
সে তখন আবারও বলে ওঠে” আমি আপনাকে আলো দেখাচ্ছি আমি গাড়ি ঘোরান। “
আমি তার কথা মেনে নিলাম কারন এছাড়া আর কোন উপায় আমার কাছে ছিল না।
সে আমাকে আলো দেখালে আমি গাড়ি ঘুড়িয়ে অন্য রাস্তাটিতে যেতে লাগি। সেই গাড়িটি ও আমাদের পেছনে পেছনে আসতে থাকে। কিছুক্ষণ পর আমরা হাই রোড এ উঠে পরি।
আমি খুশি হয়ে সেই গাড়ির মানুষ টাকে ধন্যবাদ দেবার জন্য পেছনে ঘোরার পর কিছু দেখা গেল না।
আমি অবাক হয়ে রুহিকে বললাম “রুহি গাড়িটি কোথায় গেল? “
রুহি ও অবাক হল। এবং বলল ” কয়েক সেকেন্ড আগেও তো এখানেই ছিল। “
দূড় দূড়ান্ত পর্যন্ত কোন গাড়ির চিহ্ন আমরা খুজে পেলাম না।
তখন আমি আর রুহি একসাথে বলে উঠি”কে ছিল? “
5 Responses
Supper. 🥰
খুব সুন্দর।
Thank you
Darun 👌👌👌
Thank you
Ka chilo