ভালবাসা সুন্দর, কলেজএর কিছু বেক্তিগত অনুভূতিভালবাসা সুন্দর

ভালবাসা সুন্দর, কলেজএর কিছু বেক্তিগত অনুভূতিভালবাসা সুন্দর

Written By Taniya Parvin

ভালবাসা সুন্দর, কলেজএর কিছু বেক্তিগত অনুভূতিভালবাসা সুন্দর |আমি রোজ ক্যাম্পাসে যাবার জন্য যেই বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য দাড়িয়ে থাকতাম , সেই বাসস্ট্যান্ডে একজন ভাইয়া আর আপু দাঁড়িয়ে থাকতো। সবার ভিড়েও সেই কাপলটিকে আলাদা করা যেত। তারা সবসময় একে অপরে হাত ধরে দাঁড়িয়ে থাকতো। বাস আসতো এবং একই সাথে তারা হাত ধরে বাসে উঠত।
বাসে আপুটি তার ব্যাগ থেকে উল বের করে বুনতে বসতেন একটি লাল মাফলার । কিন্তু মজার বিষয় হলো আপুটি একা উল বুনতেন না ,আপুটি কাঁটা ঘোরাতেন এবং ভাইয়াটি পাশে বসে কাটাই উল ছড়িয়ে দিত।
আমার কাছে ব্যাপারটি খুব ইন্টারেস্টিং লাগতো । তাইতো চেষ্টা করতাম তাদের আশেপাশে থাকার ।
দিনে দিনে মাফলারটিও বড় হয়ে গেল আর ওদের ভালোবাসা ওই একই রকম অবিরাম অন্তহীন ।
পরের দিন তাদের বাস কাউন্টারে দেখলাম না। ভাবলাম হয়তো অফিস ছুটি। কিন্তু তাদের আর দেখা গেল না । কি হলো তাদের?


এরই মাঝে আমিও নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।
হঠাৎ একদিন সেই ভাইয়াটির সঙ্গে দেখা হল রাস্তায়। তাকে দেখা মাত্রই ছুটে গেলাম তার কাছে। ভাইয়াটিকে জিজ্ঞাসা করলাম আপুটি কেমন আছে ?
আমার কথা শোনার পর ভাইয়াটি চোখে পানির অস্তিত্ব দেখতে পেলাম । দেখে আমি বেশ অবাক হলাম এবং আপুটির খোঁজ জানার ইচ্ছা আমার মধ্যে দ্বিগুণ হল।
ভাইয়াটি আমাকে বললেন কোথাও বসে কথা বলা যাক। আমিও তার কথা মত তার পেছনে পেছনে চলতে লাগলাম । মনের ভেতর তখনও প্রশ্ন চলছে আপুটির কি হলো?
বসার পর ভাইয়া বলতে শুরু করলেন, আপুটির ক্যান্সার ধরা পড়েছিল ডাক্তার বলেছিলেন চিকিৎসা করেও কোন লাভ নাই। খুব জোর তিন মাস।


তাই ও আমাকে রোজ অফিসে ছাড়তে আসতো। আমি বলতাম তোমার এই এক ঘন্টায় থাকা না থাকায় কি আসে যায় !
এখন বুঝি এই এক ঘন্টা সাথে থাকার মুহূর্তগুলো আমাকে এক জীবন বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছে।
আমি এতক্ষন কথাগুলি মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম। হঠাৎ আমার চোখে পড়ল ভাইয়াটির গলায় জড়ানো মাফলার দিকে। লাল রঙের অসমাপ্ত মাফলারটি একদিকে উলগুলো বেরিয়ে রয়েছে। সেটিকেই ভাইয়াটি পরম যত্নে নিজের গলায় জড়িয়ে রেখেছেন ।
হঠাৎ নিজের গালে পানির অস্তিত্ব টের পেলাম কিন্তু ঠোঁটে তৃপ্তিময় হাসি ।
সত্যিই ভালোবাসার সুন্দর।( সংগ্রহীত

4 Responses

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share: