এক আধুরি কাহানি || রিনা মন দিয়ে রোহানের ডাইরি পড়ছি সেই সময় দরজায় জোরে জোরে থাকার আওয়াজে চমকে ওঠে, তারপর দরজা খুলে দেখে রাহুল এসেছে। রিনা রোহানকে ফ্রেশ হতে বলে সে তার জন্য কফি করে আনলো কিন্তু সেদিন রোহানের মন খুব খারাপ ছিল। সে কফিটাও ঠিক মতন খেলো না। রিনা যে এত কথা বলছিল সেটাও সে মন দিয়ে শোনেনি। রোহান একটু অন্যমনস্ক ছিল তখন রিনা বলল, তুমি কি আমার কথা শুনছো? তখন চমকে উঠে রোহান বললো হ্যাঁ শুনছি বলো কি যেন বললে? তখন রিনা বলল আমি যে এত কথা বললাম তুমি কি কিছুই শোনোনি? তখন রোহান বলল হ্যাঁ কি বললে বলো না আরেকবার। রিনা তার স্বাদ নিয়ে কথা বলছিল,কাল তার স্বাদ তাই নিয়েই সে কিছু প্ল্যান করবে বলেই কথা বলছিল।
রিনা রোহানের কাঁধে মাথা রেখে বলল যে কি হয়েছে তোমার? এই কদিন দেখছি তুমি খুব অন্যমনস্ক কাল আমার স্বাদ সেই নিয়ে তুমি কিছু প্ল্যানও করছো না, কোন কথা বলছো না কি হয়েছে তোমার? রোহান কোন কথার উত্তর না দিয়ে রুমে চলে গেল।
কিন্তু রিনা তার কারণ জানতো, রিনা তখন মনে মনে বলল যে ভাগ্যিস আমি দেখে ফেলেছিলাম। রোহান তার আলমারির চাবি কোথায় রাখে, তাই তার আলমারির চাবি বের করে নিয়ে রোহানের ডাইরিটা পড়েছিলাম নাহলে জানতেই পারতাম না যে রোহান কেন বারবার চুপি চুপি আলমারি খুলে ডায়েরিতে কি পড়ে, জানতেই পারতাম না তার ডায়েরির মধ্যে কি এত স্পেশাল জিনিস যে কারণে রোহান আমার থেকেও লুকিয়ে রাখে। তারপর জানতে পেরেছিলাম সেই ডায়েরী পড়ে।
হঠাৎ করে রিনার ব্যথা ওঠে, তখন তাকে নিয়ে রোহান হসপিটালে যাই দিয়ে রিনাকে ভর্তি করে। রিনাকে নিয়ে ডাক্তাররা ওটিতে যাই ওটির বাইরে রোহান পাইচারি করতে থাকে, কিছুক্ষণ পর ওটির ভেতর থেকে বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়। নার্সরা এসে রোহানের হাতে বাচ্চাকে দেয়। তারপর রিনাকে ওটি থেকে বের করে নিয়ে বেডে দেয়,দিয়ে রিনার যখন জ্ঞান ফেরে দেখে রোহান তার কন্যা সন্তানকে নিয়ে খুব আদর করছে। আর খুব খুশিও সে তখন রিনা রোহানকে জিজ্ঞাসা করে আমাদের মেয়ের কি নাম রাখব। তখন রোহান বলে ওঠে রুক্মিণী রিনা রোহানের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে কিন্তু রোহান নামটা আচমকায় বলে দেয়। সে নিজেও জানতো না যে তার মেয়ের নাম রুক্মিণী রেখেছে সে। তারপর যখন রোহান তার খেয়ালে আসে তখন রিনাকে বলে নামটা অন্য রাখবো তখন রিনা বলে যে না আমার নামটা খুব পছন্দ। আমাদের মেয়ের নাম রুক্মিণী থাকবে।
কেন সেই ফোনের পর রোহানের দুনিয়া উলটপালট হয়ে গেছিল। সেই ডায়েরী পড়ে আমি বুঝতে পেরেছিলাম ডাইরিতে লেখা ছিল যে, যখন ফোন করে রোহানের বাবা বিয়ের প্রস্তাব দিতে তখন সেই ফোনের ওপার থেকে রুক্মিনীর বাবা ফোন তুলে বলে আমাদের মেয়ে আর বেঁচে নেই, এই কথা শুনে ফেলেছিল রোহান, আর সেই জন্যই তার দুনিয়া উলটপালট হয়ে গেছিল এক সেকেন্ডের মধ্যে।
রিনা তখন মনে মনে ভাবল কি এমন ছিল ওই রুক্মিনীর মধ্যে কেমন ছিল এই রুকমিনি? যার জন্য রোহান এখনো তাকে ভুলতে পারছে না আমি কি হতে পারব তার মতন? হয়ে উঠতে পারবো কি রোহানের মনের মতন? পারবো কি রুক্মিনীর মতন ভালোবাসা বিয়ের রোহানকে ভরিয়ে দিতে? পারব কি রোহানের জীবনে রুক্মিনীকে বাঁচিয়ে রাখতে?
এই ছিল রোহানের রুক্মিণী এই কারণেই রোহানের দুনিয়া এক সেকেন্ডের মধ্যে উলটপালট হয়ে গিয়েছিল।