এক আধুরি কাহানি

এক আধুরি কাহানি

Written By Asmina Khatun

মেয়ে দেখতে গিয়ে মেয়ের মুখে ব্রো ডাক শুনে আমি থতমত খেয়ে গেলাম। ব্রো পর্যন্ত ঠিক ছিল, কিন্তু সে রীতিমতো আমাকে অবাক করে দিয়ে আমার পিঠে চাপড়ে চাপড়ে বলল “আরে চিল ব্রো”।
তখন আমার মাথা রীতিমতো ঘুরছে, মনে হচ্ছিল মাথা ঘুরতে ঘুরতে আমি এই বুঝি পড়ে গেলাম।🤣🤣🤣

মাথাটা ঘুরে পড়ে যাওয়ার আগে আমি আমার পরিচয়টা একটু দিয়ে দিই আমার নাম রোহান,আমি বাবা-মায়ের একমাত্র পুত্র। কয়েকদিন হল একটা নতুন কাজে জয়েন করেছি। তারপর থেকে শুরু হল আমার মায়ের পাগলামি,পারলে আজই আমার বিয়ে দিয়ে দেবে। মায়ের এই পাগলামির কারণে আমার মেয়ে দেখতে আসা। প্রথমে মেয়েটা কে দেখতে কিউট মনে হলেও যখন আমাদেরকে একা কথা বলতে দেওয়ার জন্য আলাদা রুমে পাঠানো হলো এখন মেয়ের আর এক রূপ বের হলো।


” এই যে মি. বলছেন না কেন”? মাথা ঘুরানি রেখে আমি টপাক করে চেয়ারে বসে পড়লাম। এটা বিছানার উপরে গিয়ে পায়ের উপর পা তুলে বসে আমার দিকে কেমন যেন চেয়ে আছে।
” দেখেন ভাই আমি বাবু চিল্ টাইপ মানুষ “।আমার জীবনে কোন…………
মেয়েটির কথা শুনে আমি নড়ে চড়ে বসলাম,কথা যেন পেট থেকে এসে গলা অব্দি আটকে যাচ্ছে। কিছু বলতেই পারছি না। মেয়েটা আবারও বলল,
“আপনি কি আমার কথা শুনছেন?আপনার কিছু বলার আছে?আমি মাথা নেড়ে বললাম,” না”।

বাহ আপনার কিছু না বলাই ভালো।আচ্ছা শুনুন “আমার কিন্তু আপনাকে হ্যাব্বি পছন্দ হয়েছে”। বলে মেয়েটা মুচকি মুচকি হাসছে।

মেয়েটার কথা শুনে আমার মনে হল আমি মাটির নিচে ঢুকে যাই, লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমার কেন লজ্জা পাবে? এটাও ভেবে পাচ্ছি না।আমি ৫ মিনিট ধরে মনে মনে সাহস জাগিয়ে বললাম,
” আপনার নামটা জানতে পারি”?
আমার কথা শুনে মেয়েটা আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে থাকলো যেন এর থেকে আশ্চর্যজনক আর কোন কথা হতেই পারে না।
আমি আবারো জিজ্ঞাসা করলাম “আপনার নাম কি”?

মেয়েটা এবারও আমার দিকে তাকিয়ে আছে।।
“রুক্মিণী”
আমি তখন বললাম বাহ সুন্দর নাম তো।
এটা কোন কথা না বলে সেখান থেকে উঠে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। আমি তার পিছু পিছু গেলাম । আমার বাবা মা ওর বাবা মায়ের সাথে টুকটাক কথাবার্তা বলল, চাইলেও আর কিছু বলতে পারলাম না। এবারের মতন বাড়ি ফিরে এলাম।

বাড়ি এসে এক অদ্ভুত রোগের সম্মুখীন হলাম। সেই রোগের নাম রুক্মিণী। আমি এসেই মাকে বলে দিয়েছিলাম আমি ওকে ছাড়া আর কাউকেই বিয়ে করব না। আমার কথায় মা বেশ খুশি হল। সে তো পারলে আমি রুক্মিণীদের ফোন করে জানায়। কিন্তু আমি না করলাম কারণ আমার তো একটা নাম আছে না। কিন্তু এই নাম নিতে গিয়ে পরলাম এক মুসিব্বতে। দিনরাত ২৪ ঘন্টা শুধু রুক্মিণী মাথায় ঘুরতে থাকে, উঠতে বসতে শুধু রুক্মিণীর কথাই ভাবি। তার মুখের ব্রো ডাকটাও মধুর লাগতে শুরু করে। অনেক কষ্ট করে হলেও এক সপ্তাহ পার করি, কিন্তু ৮ দিনের দিন আর পেরে উঠতে পারলাম না । মায়ের কাছে গিয়ে বললাম যে মা, আমি রুক্মিণীকে চাই। তুমি রুক্মিণীদের বাড়িতে ফোন করে বলো না যে যেন আমার সাথে রুক্মিণীর বিয়ে দেয়।

আমার কথা শুনে মা তো ভ্যাবাচ্যাকা হয়ে গেল। মা মুচকি হেসে আমার মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে বলল আমি তো কবেই ফোন দিতে চেয়েছিলাম, তুইতো না করলি। তোর বাবা সন্ধ্যায় আসলে তাদেরকে ফোন করবো।
মায়ের কথা শুনে আমি তো খুশিতে মুগ্ধ হয়ে গেলাম, আবার লজ্জাও লাগছিল।

সেদিন বিকাল থেকে যেন সন্ধ্যে হতে চাইছিলই না। অবশেষে যেন সন্ধ্যা হলো। বাবা বাড়িতে আসলো মা দেখলাম বাবাকে জামা কাপড় না চেঞ্জ করতে দিয়েই বাবাকে বলল,
“তুমি তাড়াতাড়ি রুক্মিণীদের বাড়িতে ফোন করে বলো আমাদের মেয়ে খুব পছন্দ”।

বাবা বেচারা মায়ের সাথে পেরে না উঠে রুক্মিণীদের বাড়িতে ফোন করল। আমি দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে তাদের কথা শোনার চেষ্টা করছি। হঠাৎই আমার কানে কিছু কথা এলো আর মুহূর্তের মধ্যেই আর পুরো পৃথিবীটা যেন বদলে গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share: